বৌদ্ধধর্ম | Buddhism | Ancient Indian History MCQs

 বুদ্ধদেব এবং বৌদ্ধধর্মের ইতিহাস


বন্ধুরা, আজকের এই পর্বে আমরা বুদ্ধদেব এবং বৌদ্ধধর্মের (Buddhism) ইতিহাসের উপর থেকে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করবো। আপনাদের বিভিন্ন রকম প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য আজকের এই পর্বের বৌদ্ধধর্মের ইতিহাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেখে নিন এবং আপনাদের বিভিন্ন পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য নিচে বৌদ্ধধর্মের ইতিহাসের উপর থেকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নোত্তর দেওয়া হয়েছে সেগুলোও দেখে নিতে পারেন। আপনাদের আগত বিভিন্ন রকম প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা wbcs psc upsc ssc cgl net set rail group c & d ctet cleark এবং Competitive exam এর জন্য উপযোগী হবে। বৌদ্ধধর্মের বিষয়ে নিচে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল। 


www.gkghor.in
Buddhism | Ancient Indian History | Buddhism MCQ in Bengali | History Question Answer


                                                                    

বৌদ্ধধর্মের ইতিহাস (Buddhism):

খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতকে উত্তর ভারতের রাজনৈতিক সামাজিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে এক আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ব্রাহ্মণ্য ধর্মের জটিলতা থেকে মুক্ত হতে সহজ সরল হৃদয়গ্রাহী বৌদ্ধ ধর্মের উদ্ভব হয়।


বুদ্ধদেব ও বৌদ্ধ ধর্ম:

 নেপালের কপিলাবস্তুর এক সম্ভ্রান্ত ক্ষত্রিয় বংশে বুদ্ধদেবের জন্ম হয়। তার পিতা শুদ্ধোদন মা মায়াদেবী ছিলেন । জন্মকালে কপিলাবস্তু স্বাধীন থাকলেও শুদ্ধোদন সেখানকার একচ্ছত্র রাজা ছিল না।



বুদ্ধদেবের জীবনী:

 প্রথম জীবনে বুদ্ধদেব গৌতম এবং সিদ্ধান্ত নামে পরিচিত ছিলেন। শাক্য বংশে জন্ম হয় বলে তিনি শাক্য সিংহ নামে পরিচিত হন। গৌতমের গৃহত্যাগের ঘটনা মহাভিনিষ্ক্রমণ নামে অভিহি। সত্যের সন্ধানে ঘুরতে ঘুরতে গৌতম এলেন লিচ্ছবি গন রাজ্যের রাজধানী বৈশালীতে। ধর্ম প্রচারের মাধ্যম রুপে বুদ্ধ সংস্কৃত ভাষাকে গ্রহণ করেনি, গ্রহণ করলেন লোকভাষা মাগধী ও প্রাকৃতকে। উত্তরের কপিলাবস্তু থেকে দক্ষিণ এবং পূর্ব থেকে পশ্চিমে বিভিন্ন অঞ্চলের স্থানে ভ্রমন করে তিনি বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করেছেন।


৫৪৪ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বুদ্ধ পূর্ণিমায় নির্বাণ লাভ করেন। অনেক ক্ষেত্রে বুদ্ধের পরিনির্বাণ তারিখ আনুমানিক ৪৮৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দ। প্রাচীন চীনা সাহিত্যে বিনয় পিটকে এক অতি পুরনো পান্ডুলিপিতে এই কথা উল্লেখ আছে । বুদ্ধদেব ৮০ বছরে বৃদ্ধ কালে মারা যান।  


বুদ্ধের ধর্ম মত বা বৌদ্ধ ধর্ম:

 আর্য সত্য এবং অষ্টাঙ্গিক মার্গের উপর ধর্মমত প্রতিষ্ঠিত। চারটি আর্য সত্য হলো দুঃখ, সত্য, সমুদয় নীরোধ, সম্যক দৃষ্টি। অষ্টাঙ্গিক মার্গের অনুশীলনের মধ্য দিয়ে জীবের তৃষ্ণা ও অবিদ্যা দূর হয় এবং শেষে পরমপদ নির্বাণ লাভ হয়। নির্বাণ লাভের চারটি স্তরে স্রোতাপন্ন, সকৃদগামী, অনাগামী এবং  অহিংসা। হিংসা-বিদ্বেষ ও স্বার্থমগ্ন পৃথিবীকে বুদ্ধ নতুন পথের সন্ধান দিয়েছেন।


 বৌদ্ধ সংঘ :

ভিক্ষুদের সংগঠিত ও সুসংহত করার উদ্দেশ্যে বুদ্ধ সংঘের প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতি মাসে দুবার করে উপোসথ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা  হত। সংঘের কাজকর্ম চলত গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে, কখনো সঙ্গে অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখা দিলে ভোটের মাধ্যমে বিরোধের নিষ্পত্তি হত। বুদ্ধ তাঁর উপদেশাবলী লিপিবদ্ধ করে যাননি । তাঁর শিষ্যদের মুখে মুখে উচ্চারিত হতো। কালের গতির সঙ্গে ভিক্ষুরা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য দুটি দলে বিভক্ত হয়।  সংঘ গুলি ছিল স্বয়ং শাসিত ও স্বয়ং সম্পূর্ণ। ভিক্ষু বা ভিক্ষুনীদের যে মন্ত্র পালন করত তা হল - "বুদ্ধং শরণং গচ্ছামি ","ধম্মং শরণং গচ্ছামি","সঙ্ঘং শরণং গচ্ছামি"।


 বৌদ্ধ ধর্মশাস্ত্র : 

 বৌদ্ধ ধর্ম শাস্ত্র কে ত্রিপিটক বলা হয় | ত্রিপিটকের তিনটি ভাগ রয়েছে যথা- সুত্তপিটক,বিনয় পিটক ও অভিধর্ম পিটক। বৌদ্ধ ধর্মের নৈতিক বিষয়গুলি আছে সুত্তপিটক এ। অভিধর্ম পিটকে আলোচনা করা হয়েছে দার্শনিক দিকগুলি। বিনয় পিটকে বিধান ও সংঘের বিষয়গুলি পরিচালনার জন্য নিয়মসমূহ  আলোচনা করা হয়েছে।


বৌদ্ধধর্ম  বিবর্তন ও প্রসারের কারণ :

 বুদ্ধদেব মানবিক গুণের বিকাশ এর উপরে জোর দিয়েছেন ।দার্শনিক তত্ত্বের বাতাবরণ সৃষ্টি করে তিনি তাঁর ধর্মমতকে জটিল করে তোলেননি। তার উপদেশ ছিল সহজ ও মর্মস্পর্শী। ফলে সহজেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তার প্রচারিত বৌদ্ধধর্ম। বৌদ্ধ ধর্মের প্রসারিত হওয়ার প্রধান কারণ হলো রাজা, মহারাজা ও অভিজাত সম্প্রদায়ের পৃষ্ঠপোষকতা। উত্তর-পশ্চিম ও পূর্ব ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বৌদ্ধধর্ম  সহজে প্রসার লাভ করে।


মৃত্যুর পর তার শিষ্যরা তার বাণী গুলি চারটি বৌদ্ধ সংগীতি বা সম্মেলনের আহ্বান করেন। ৪৮৩ খ্রিস্ট পূর্বাব্দে রাজগিরি প্রথম বৌদ্ধ সংগীতি অনুষ্ঠিত হয়। ৩৮৩ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে বৈশালীতে অশোকের সময় দ্বিতীয় বৌদ্ধ সংগীতি অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৫১ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে পাটলিপুত্রে অশোকের সময় তৃতীয় বৌদ্ধ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ।বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দুটি ভাগে বিভক্ত হয়েছে - মহাযান ও হীনযান।


বৌদ্ধধর্মের বিলুপ্তির কারণ :

 দ্বাদশ শতকের শেষের দিকে এক তুর্কি সেনাপতি মোহাম্মদ বখতিয়ার দুর্গ ভেবে বিহারের ওদন্তপুরী মহাবিহার ধ্বংস করেন। যে নৈতিকতা বৌদ্ধ ধর্মের মূলমন্ত্র কালক্রমে বৌদ্ধ ধর্ম তা থেকে দূরে সরে আসে। কুমারিল ভট্ট ও শঙ্করাচার্যের মতো বৈদান্তিক ধর্মপ্রচারকদের আবির্ভাব বুদ্ধ ধর্মের পক্ষে শুভ হয়নি। এইসব  কারণে বৌদ্ধধর্ম ধীরে ধীরে ভারত থেকে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়।


👉 Pre-History MCQs


👉 Buddhism Mock Test

Post a Comment

0 Comments